ঝিনাইদহের হরিধানের উদ্ভাবক হরিপদ কাপালী আর নেই। বৃহস্পতিবার ভোরে মারা গেছেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ১’শ বছর।
তার স্বজনরা জানান, বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে হরিপদ স্ত্রী, ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
হরিপদের শেষকৃত্য আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে ঝিনাইদহ সদরের সাধুহাটি ইউনিয়নের আসাননগর নিজ গ্রাম অনুষ্ঠিত হবে।
নব্বই এর দশকে হরিপদ কাপালী উন্নত জাতের ধান উদ্ভাবন করেন। এলাকাবাসী এই ধানের নাম দেন ’হরি ধান’। ধানটির জনপ্রিয়তা ঝিনাইদহের আসাননগর থেকে ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের জেলায়।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার আসানসোল গ্রামের কৃষক হরিপদ কাপালী ১৯৯৯ সালে নিজের ধানের জমিতে একটি ছড়া তার নজর কাড়ে। ধানের গোছা বেশ পুষ্ট এবং গাছের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। এ ছড়াটি তিনি নজরদাড়িতে রাখলেন।
ধানের বাইল (ছরা) বের হলে তিনি দেখতে পান বাইলগুলো তুলনামূলকভাবে অন্য ধানের চেয়ে দীর্ঘ, এবং প্রতিটি বাইলে ধানের সংখ্যাও বেশি।
ধান পাকলে তিনি আলাদা করে বীজ ধান হিসেবে রেখে দিলেন। পরের মৌসুমে এগুলো আলাদা করে আবাদ করলেন এবং আশাতীত ফলন পেলেন। এভাবে তিনি ধানের আবাদ বাড়িয়ে চললেন। আর নিজের অজান্তেই উদ্ভাবন করলেন এক নতুন প্রজাতির ধান, হরিধান।
মূলতঃ ডারউইনের আবিস্কৃত কৃত্রিম নির্বাচনের একটি সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন প্রান্তিক কৃষক হরিপদ কাপালি
এ ধান বিঘাপ্রতি ফলন ১৮ থেকে ২০ মণ। ধানের গোছা পুরুষ্টু ও বিচালি শক্ত। মোটা চাল। ভাত মোটা হলেও সুস্বাদু।
এরপর তাকে নিয়ে কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল ও পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রচারিত হয়।
এর দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে হরি ধানের সুখ্যাতি। সুনাম আর সম্বর্ধনা পেতে থাকেন হরিপদ। স্কুলের পাঠ্য বইয়ে নাম লেখা হয় হরিপদের। সেই হরিপদ মাঠেই পড়ে থাকতেন সব সময়। মাটির সঙ্গে ছিল মমত্ববোধ। সব ছেড়ে আজ চির বিদায় নিলেন তিনি।
জেএইচ